প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণার জন্যই শেষ হয়েছিল কেরিয়ার! ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন প্রয়াত অভিনেতা অভিষেক

বাংলা বিনোদন জগতের জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায় প্রয়াত হয়েছেন। তাঁর মৃ’ত্যুর খবর প্রথমে মেনে নিতে পারেননি কেউই। মৃ’ত্যুকালীন অভিনেতার বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৭ বছর। বিগত কিছুদিন যাবৎ অসুস্থ ছিলেন, বাড়িতেই চলছিল চিকিৎসা।

কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না, বৃহস্পতিবার নিজের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অভিনেতা। ১৯৮৬ সালে তরুণ মজুমদার পরিচালিত ‘পথভোলা’ ছবি দিয়েই টলিউড পা রাখেন অভিনেতা। এরপর এরপর একে একে সংঘর্ষ, ফিরিয়ে দাও, দহন, বাড়িওয়ালি, মধুর মিলন , মায়ের আঁচল, আলো ,ওয়ান, নীলাচলে কিরীটি এর মতো একাধিক ছবিতে একাজ করেছেন।

প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় থেকে তাপস পাল, দেবশ্রী রায়, ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তর মত তারকাদের সাথেও কাজ করেছেন তিনি। তবে একসময় টলিউডের হিরোদের মধ্যে অন্যতম হলেও ধীরে ধীরে টলিউড থেকে হারিয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা। এরপর বড়পর্দা ছেড়ে ছোটপর্দায় দেখা মেলে তাঁর।

এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে  অভিনেতা জানিয়েছিলেন, ‘এখনকার সিস্টেম অনেকটাই বদলে গিয়েছে। প্রোডাকশন হাউজগুলোর নির্দিষ্ট লবি রয়েছে। তারা একটা সেট অফ আর্টিস্ট নিয়েই কাজ করে। পুরনো সময়ের বেশির ভাগ অভিনেতাই আজ ব্রাত্য।’ অভিনেতার মতে তিনি চাইলে সিনেমায় কাজ করতেই পারতেন।

তবে এখনও তিনি অতটাও বুড়ো হয়ে যাননি যে তাকে দেব বা জিৎ এদের বাবার চরিত্রে অভিনয় করতে হবে। কারণ বলিউডে সালমান থেকে শাহরুখ এখনও নায়কের চরিত্রে দিব্যি অভিনয় করে চলেছেন। আসলে ‘তেলবাজি’ বিষয়টা বর্তমানে মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এছাড়া নব্বইয়ের দশকের পর হটাৎ কেন হারিয়ে যান তিনি? এই প্রশ্নের উত্তরে অভিনেতার সাফ জবাব ছিল, তার কেরিয়ার শেষ করে দিয়েছেন সেই সময়ের জনপ্রিয় জুটি প্রসেনজিৎ – ঋতুপর্ণা। অভিনেতা জানিয়েছিলেন, ‘ ৯০ এর দশকে প্রসেনজিৎ-ঋতুপর্ণা জুটির জেরে প্রায় ৩০-৩২ টা ছবি থেকে বাদ পড়তে হয়েছিল।

সেই সময় টলিউডে এক নাম্বার হয়েও আমার কাছে কোনো কাজ ছিল না। কাজ ছাড়া বসে থেকে ডিপ্রেশনে চলে গিয়েছিললাম। এভাবে বছর দুয়েক যাবার পর যাত্রায় যোগ দিই। তারপর ধীরে ধীরে ইন্ডাস্ট্রি থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়’। তাঁর মতে, সেই সময় প্রসেনজিৎ এর একমাত্র প্রতিযোগী ছিলেন তিনি। অথচ প্রসেনজিৎকে বন্ধুই মনে করতেন তিনি। কিন্তু ঋতুপর্ণার সাথে একটা ভুলবোঝাবুঝির পর থেকেই তাঁর সাথে কাজ থামিয়ে দেন।

সেই সময় লোকের মুখ থেকে শুনতে হয়েছিল ‘অভিষেক ফুরিয়ে গিয়েছে’। তবে লোকের কথা মিথ্যে প্রমাণ করে আবারো ফিরে এসেছিলেন তিনি। ছোটপর্দায় নিজের দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে আবারও জয় করেছিলেন দর্শকদের মন। কিন্তু এসব এখন সবটাই অতীত। তার হঠাৎ এই প্রয়াণে শোকস্তব্ধ গোটা টলিপাড়া।