ভাষা এবং সংষ্কৃতির বাধা পেরিয়ে যে সমস্ত বাঙালি মুম্বইয়ের বিটাউনে নিজেদের অস্তিত্ব তৈরি করেছেন, তাঁদের মধ্যে সবার আগে যার নাম আসবে তিনি হলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)।মুম্বাই এর তৎকালীন নাম ছিল বম্বে।কলকাতার জোড়াবাগানের মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে মিঠুনকে মুম্বই গিয়ে যে একাধিক সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। এসব কথা বহুবার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন ডিস্কো ডান্সার মিঠুন চক্রবর্তী।
তৎকালীন বম্বে তে যখন মিঠুন (Mithun Chakraborty) পা রেখেছিলেন তখন তার চোখে ছিল নায়ক হওয়ার স্বপ্ন।তবে তার না ছিল কোনো ফিল্মি ব্যাকগ্রাউন্ড আর না ছিল পকেটের জোর। এমনকি তার বাবাও ছেলের অভিনয়ে আসার ইচ্ছাকে সমর্থন করতে পারেননি। আর সেই কারনে মিঠুন মুম্বই চলে এলেও প্রথমদিকে তার প্রতি মুখ ফিরিয়েই থেকেছেন তার বাবা।তবে বাবাকে পাশে না পেলেও মায়ের সাহায্য থেকে বঞ্চিত হননি তিনি।
দিনকয়েক আগে জনপ্রিয় রিয়ালিটি শো ডান্স বাংলা ডান্সের মঞ্চে নিজের মায়ের ব্যাপারে বলতে গিয়ে আবেগঘন হয়ে পড়েন অভিনেতা। মিঠুন (Mithun Chakraborty) জানান, তাঁর মা তাঁকে প্রতি মাসে ১৫০ টাকা করে পাঠাতেন।অভিনেতা জানান,তার মায়ের যেটুকু সম্বল ছিল,গয়না বন্ধক রেখে যতটা সম্ভব করতেন ছেলের জন্য।
মায়ের পাঠানো টাকাতে নির্ভর করেই মুম্বইয়ে অভিনেতা হওয়ার সংগ্রাম করতেন মিঠুন (Mithun Chakraborty)।তিনি আরও জানান,পেয়িং গেস্টের ভাড়া হিসাবে ১৫০ টাকার মধ্যে ৭৫ টাকা দিয়ে দিতে হত।আর বাকি যে ৭৫ টাকা থাকতো তা দিয়ে মাস চালাতে গিয়ে অনেক সময়ই অনাহারে কিংবা অর্ধাহারে দিন কাটিয়েছেন তিনি। কিন্তু জীবনের এই যুদ্ধে হার মেনে কলকাতায় ফেরেননি মিঠুন।আর এই কঠিন লড়াই শেষে সাফল্যও পান তিনি।
নিজের মাকে কিছুদিন আগে হারিয়েছেন মিঠুন। মুম্বইতে ছেলে মিঠুনের সঙ্গেই থাকতেন তিনি।মিঠুন বলেন, ‘মায়ের গুরুত্ব সন্তানের জীবনে অপরিসীম। বাবার অবদানও অনেক। মা যদি ভাবে আজ সন্তান কী খাবে, তাহলে বাবা ভাবে সারা জীবন আমার সন্তান কী খাবে। তবুও মায়ের সঙ্গে যোগটা বেশিই নিবিড়। বাবারা মুখ ফুটে বলেন না।’