লড়াই প্রত্যেককেই কমবেশি করতে হয়। কিছু কিছু মানুষের জীবনের গল্প হয় মন ছোঁয়া। তেমনই একজনের কথা শুনলে অবাক হবেন সকলেই। তিনি সকালে পড়ান আর রাতে কুলির কাজ করেন। শুনে মনে হতে পারে এটা যেন সিনেমার কোনও স্ক্রিপ্ট বা উপন্যাসের কোনও চরিত্র। আদতে কোনোটাই নয়। বিষয়টা হল, নাগেশু পাত্র সকালে একটি বেসরকারি কলেজে পড়ান আর রাতে করেন কুলির কাজ। কিন্তু কেন? এই ঘটনার পিছনে রয়েছে এক বিরাট কারণ।
ওড়িশার (Odisha) ছেলে নাগেশু পাত্র। এমনিতে সে বেসরকারি কলেজে গেস্ট লেকচারার (Guest Lecturer) হিসেবে পড়ান। মাসের শেষে মাইনে পান মাত্র ৮ হাজার টাকা। সেই টাকার পুরোটাই তাঁকে পাঠিয়ে দিতে হয় তাঁর বাবা-মাকে। কিন্তু করোনার সময়ে কোচিং সেন্টার খোলেন। সেখানে এইট থেকে টুয়েলভ ক্লাসের পড়ুয়াদের পড়ানো হয়। হিন্দি, ওড়িয়া ছাড়া সব বিষয়ে সেখানে পড়ানো হয়।
প্রথমদিকে এই কোচিং সেন্টারে নাগেশু নিজেই পড়াতেন। কিন্তু পরবর্তীতে আরও ৪ জন শিক্ষককে তিনি সেখানে পড়াতে বলেন। আর এই ৪ জন শিক্ষকের বেতন জোগাড় করার জন্যই রেল কুলির কাজ বেছে নিতে হয়েছে। ওড়িশার গঞ্জামের বেরহামপুর স্টেশনে বিশাল বোঝা বয়ে নিয়ে যেতে হয় তাঁকে।
তাঁর দু-চোখে স্বপ্ন গরীব ছেলেমেয়েদের পড়ানো। ২০০৬ সালে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায় দারিদ্র্যতার জন্য। পরবর্তীতে ২০১২ সালে করেশপনডেন্সে উচ্চ মাধ্যমিক এবং পরবর্তীতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেন। এরপর কলজের গেস্ট লেকচারারের চাকরি শুরু করেন। এরপর কোচিং খোলেন। আর কোচিংয়ে শিক্ষকদের বেতন দেওয়ার জন্যই কুলির কাজ করতে শুরু করেন। ২০১১ সাল থেকে বেরহামপুর স্টেশনে নথিভূক্ত কুলি হিসেবে কাজ আরম্ভ করেন।